পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতার ও সৌদি জোটের মধ্যকার তিক্ত সম্পর্কে অদ্ভূত প্রভাব ফেলছে হাজার মাইল দূরের একটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে কাতার সংকট নিয়ে কিম জং উনের উত্তর কোরিয়ার অদ্ভূত প্রভাবের বিষয়টি উঠে এসেছে।
সৌদি আরব দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কাতারের অবৈধ অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে কাতারও একই অভিযোগ তুলেছে।
বেশ আগে থেকেই পিয়ংইয়ং’র ক্রমবর্ধমান পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ওয়াশিংটনের মাথা ব্যথার কারণ।
গত সপ্তাহে অনলাইনে একটি খবর চাউর হয়, কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করা সৌদি জোটের অন্যতম শরিক সংযুক্ত আরব আমিরাত উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অস্ত্র ক্রয় চুক্তি করেছে।
এমন খবরের পাল্টা হিসেবে গত মঙ্গলবার প্রতিপক্ষ কাতারের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠে। বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কাতারের ‘বিপজ্জনক’ সম্পর্ক রয়েছে।
দুটি অভিযোগের পক্ষেই কিছু সত্যতা রয়েছে। একটি আমিরাতি কোম্পানির কাছে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র বিক্রি-সংক্রান্ত ইমেইল লিক হয়ে গিয়েছিল ২০১৫ সালে। সে সময় ওয়াশিংটনে আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসূফ আল ওতাইবাকে স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
আর কাতারের ব্যাপারে এটা সত্য যে, তারা উত্তর কোরিয়ার অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যবহার করে। অন্তত তিন হাজার উত্তর কোরিয়ান শ্রমিক রয়েছে কাতারে। বেশিরভাগই ২০২২ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিভিন্ন কাজ করছেন।
অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের বর্তমান উপযোগিতা হচ্ছে, একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এগুলো ভূমিকা রাখছে। কাতার সংকট নিয়ে নতুন মোড় নিচ্ছে।
আর চলমান এই সংকটে যুক্তরাষ্ট্র কী ভূমিকা নেবে, তা নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্লেখ্য, সন্ত্রাসবাদে মদদ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগ এনে গত ৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় ইয়েমেন ও মালদ্বীপ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের কয়েক দিন পরই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে সৌদি জোট। এতে করে ট্রাম্পই যে এই অবরোধ আরোপের কলকাঠি নেড়েছেন, তা উঠে আসে।
পরে সংকট উত্তরণে সৌদি জোট আল জাজিরা টিভি চ্যানেল বন্ধ ও দোহায় তুরস্কের সেনাঘাঁটি সরানোসহ ১৩টি শর্ত দেয়। তবে নিজেদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে কাতার এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করে।
No comments:
Post a Comment