- SaraBela News

Breaking

SaraBela News

It's a site of SS Connections.

4G-1010-X-90
English বাংলা

Post Top Ad

4G-1010-X-90

Post Top Ad

Friday, April 15, 2022

বাঙালি আজ করোনা মহামরির বিধিনিষেধ পেরিয়ে, পুরোনো জরা ও গ্লানি ঝেড়ে ফেলে বরণ করে নেবে নতুন বছরকে। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি উপলক্ষে দেশজুড়ে চলবে নানা উৎসব-আয়োজন। তাতে বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার প্রয়াস থাকবে। দোকানিরা সারা বছরের হিসাব মিলিয়ে খুলবেন হালখাতা। বিভিন্ন স্থানে বসবে বৈশাখী মেলা। বাঙালির জীবনে বছরে একবারই আসে এমন দিন, যা একান্তই আমাদের জাতিসত্তার অংশ। আমাদের বর্ষবরণের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার উৎসব। তবে বর্তমানে এ উৎসব হয়ে উঠেছে কিছুটা শহরকেন্দ্রিক। অথচ গ্রামই এদেশের প্রাণ। গ্রামের মানুষ, মূলত কৃষকরাই বাংলা দিনপঞ্জি অনুসরণ করে থাকেন। বাংলা ঋতুচক্র মেনে করেন চাষাবাদ। সারা দেশে নববর্ষের আনন্দ-উদযাপন ছড়িয়ে দিতে তাই গ্রামীণ জীবনেও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষবরণের আয়োজন তাতে হয়ে উঠবে আরও সর্বজনীন। পহেলা বৈশাখ ভোরবেলায় রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান বর্ষবরণ উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটিও আমাদের এক ঐতিহ্য হয়ে উঠেছে। গত দুই বছর করোনার কারণে রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান হয়নি। এবার হচ্ছে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে তা চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। ছায়ানট ছাড়াও বর্তমানে বেশকিছু সংগঠনের উদ্যোগেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বর্ষবরণের নানা উৎসব-আয়োজন করা হয়ে থাকে। আজকাল কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসছে এ ধরনের অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায়। তবে বর্ষবরণের মূল উৎসবটি হয়ে থাকে রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান ঘিরেই। ২১ বছর আগে এই দিনে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় প্রাণ হারান নয়জন। আহত হন অনেকে। বছর সাতেক আগে পহেলা বৈশাখে রাজধানীতে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে। এসব ভালো লক্ষণ নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এবারও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পহেলা বৈশাখের মতো অসাম্প্রদায়িক উৎসবের প্রতি ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর গাত্রদাহ থাকাটাই স্বাভাবিক। আশার কথা, রমনার নৃশংস ঘটনা বাঙালিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমই এর প্রমাণ। তবে বন্ধ হয়নি অপশক্তির তৎপরতাও। প্রতিক্রিয়াশীলরা গণতন্ত্র, প্রগতি, বাঙালি সংস্কৃতি-সবকিছুরই বিরুদ্ধে। আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে জোরদার করে, প্রগতির পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরে, বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চরিত্র আরও বিকশিত করেই অপশক্তিকে রুখতে হবে। বাংলা নববর্ষের হাত ধরে প্রায় একই সময়ে উদযাপিত হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বৈসাবি, বিজু ইত্যাদি উৎসব। চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখের নানা আয়োজন চলে বিভিন্ন পাহাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে। উপমহাদেশের অন্যান্য জাতির নববর্ষও আসে প্রায় অভিন্ন সময়ে। নিজেদের বর্ষবরণ উৎসবে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আমরা যদি অন্যদের এ ধরনের উৎসবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই এবং তাতে অংশ নিই, তাহলে তা শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বাংলা সনের প্রবর্তন হয় খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে। নববর্ষে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে দোকানে দোকানে হালখাতা খোলার রীতি আজও প্রচলিত। বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ অর্থনীতিতে একধরনের প্রাণসঞ্চার হয় প্রতিবছর। হস্তশিল্পের প্রসারে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। শহরাঞ্চলে বুটিক ও ফ্যাশন শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ার বিষয়টিও উৎসাহব্যঞ্জক। ক্ষুদ্র ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে এ শিল্প। এসব কর্মকাণ্ড আমাদের সংস্কৃতিতে যুক্ত করছে নতুন মাত্রা। আজ পহেলা বৈশাখ আপন শিল্প-সংস্কৃতির ধারাকে ঋদ্ধ ও বেগবান করার শপথ নেওয়ার দিন। নতুন বছর দেশবাসীর জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা বয়ে আনবে, এটাই প্রত্যাশা। শুভ নববর্ষ।

No comments:

Post a Comment

Photography

Post Top Ad

Responsive Ads Here